শরীরে স্প্রিন্টারের যন্ত্রণায় এখনো রাতে ঘুমাতে পারেন না নাজিম উদ্দিন

শরীরে স্প্রিন্টারের যন্ত্রণায় এখনো রাতে ঘুমাতে পারেন না নাজিম উদ্দিন
এম আর ওয়াসিম,  ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ  প্রায় দেড় যুগ সময় পেরিয়ে গেলেও ২১শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় এখনো বাস্তাবায়ন হয়নি। ভয়াবহ সেই গ্রেনেড হামলায় আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী ভৈরবের নাজিম উদ্দিন সারা শরীরে অসংখ্য স্প্রিন্টারের অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে এখনো বেচেঁ আছেন। কিন্তু, সেই দিনের সেই দুঃসহ স্মৃতি আজো তাকে তাড়া করে বেড়ায়। ফলে রাতে ঘুম আসে না দু’চোখে।
জানাযায়, ২০০৪ সালের ২১শে আগষ্ট নারীনেত্রী ও আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শহীদ বেগম আইভি রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ছিলেন ভৈরবের আকবরনগর গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন। বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় যোগ দিয়ে ছিলেন তিনি। আইভি আপা পানি খাবেন। তাই, পানি কিনতে দোকানের উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই গ্রেনেডের বিকট শব্দে স্তব্দ নাজিমের কান। চারদিকে শুধু ধোয়াঁ। মুহুর্তেই আরও দু’একটি শব্দের পর আর কিছুই জানেন না তিনি।
ঘাতকদের গ্রেনেড হামলায় সেদিন গুরুতর আহত হন নাজিম উদ্দিন। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ভেবে লাশের সাথে ফেলে দিয়ে ছিল। পরে হঠাৎ জ্ঞান ফিরে তার। তাৎক্ষনিক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেনাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ভারতে চিকিৎসার জন্য পাঠান।
সেখানে দীর্ঘ দিন চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসেন। তার বুকে ও পায়ে ৪টি মেজর অপারেশন করা হয়েছে। এতেও পুরোপুরি সুস্থ বা চলাফেরায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না পাওয়ায় কর্ম ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন তিনি। বর্তমানে তার বুকে ও দুই পায়ে অসংখ্য স্প্রিন্টার রয়েছে। দ্রুত এগুলো অপসারণ করা খুবই প্রয়োজন। ফলে দিন শেষে রাতে দু’চোখে ঘুম আাসে না তার। এছাড়াও শীত এলে দেহে স্প্রিন্টারের কারণে অসহ্য যন্ত্রণার পরিমানের মাত্রা আরও বাড়ে। আবার গরমে রোদে যেতে পারেন না তিনি। সামান্য চুলকানিতে শরীর দিয়ে রক্ত ঝরে। এই জন্য তার আরও চিকিৎসার প্রয়োজন। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে না পারায় দুঃসহ যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন নাজমুল হাসান ওরফে নাজিম উদ্দিন। তাই, নাজিম উদ্দিনের সু-চিকিৎসার দাবী জানান এলাকাবাসী।
২১শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী নাজিম উদ্দিন জানায়, ঘাতকদের গ্রেনেড হামলায় ইতিমধ্যে অনেকে মারা গেছেন। অনেকে আবার আহত অবস্থায় মৃত্যু যন্ত্রণা নিয়ে বেচেঁ আছেন। যারা বেচেঁ আছেন তারা অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না। এভাবে তিলে তিলে নিঃশ্বেষ হয়ে যাচ্ছেন তারা। তাই, আহতদের পূর্ণ চিকিৎসা ও পূর্ণবাসনসহ গ্রেনেড হামলা জড়িতদের দ্রুত বিচার আইনে ফাসি কার্যকর করবে সরকার। মরার আগে দেখে যেতে চান তিনি।

আপনি আরও পড়তে পারেন